আজ সোমবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১লা জুলাই, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

দালালদের দখলে সরকারি ভিক্টোরিয়া হাসপাতাল!

দালালদের দখলে

দালালদের দখলে শিপন মীর:
নারায়ণগঞ্জের ১’শ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল ভিক্টোরিয়া। নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও রোগীর স্বজনরা। হাসপাতালের চিকিৎসা সেবাকে পুঁজি করে হাসপাতাল কর্মচারীদের সহযোগিতায় সক্রিয় হয়ে উঠেছে দালালচক্র। হাসপাতালের বহির্বিভাগের রোগী ও ভর্তি রোগীদের প্রাইভেট ক্লিনিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অসাধু কর্মচারী ও দালালদের মধ্যে চলে টানাটানির প্রতিযোগিতা।
হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীদের বিভিন্ন অনিয়মে সরোবর নারায়ণগঞ্জের ১’শ শয্যা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটি। দীর্ঘ ১ সপ্তাহের অনুসন্ধানে দেখা যায়, ৫ টাকার টিকিট কিনে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে আছেন রোগীরা। কিছু রোগীকে লাইন ভেঙ্গে আগে নিয়ে যাওয়ার জন্য ৫০/১০০ টাকার মাধমে প্রস্তাব করছেন হাসপাতালের অসাধু কর্মচারীরা। এতে করে লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা রোগীদের। ডাক্তার কক্ষে ডাক্তার প্রেসক্রিপশন লিখে দিচ্ছে তার সাথে সাথে সেই রোগীকে নিয়ে টানাটানি করছে অসাধু কর্মচারী ও প্রাইভেট ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিকের দালালরা।

দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাঁড়িয়ে থেকে ডাক্তার দেখানোর পর রোগীদের টানাটানিতে তারা আরোও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। হাসপাতালের দারওয়ান সাউদ মাসে কমপক্ষে ৫’শ টাকার মাধ্যমে ডাক্তারদের সাথে ঔষধ কো¤পানীর কর্মকর্তাদের ভিজিট করার ব্যবস্থা করে দেন। দারোয়ান সাউদের নামে আরো অভিযোগ রয়েছে ঔষধ কো¤পানীর কর্মকর্তাদের ব্যাগে হাত দিয়ে প্যাড, কলম ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিস নিয়ে যায়।

রোগীদের সাথে হাসপাতালের দারোয়ান সাউদ ও অন্যান্য কর্মীরা অশোভনীয় আচরণ করেন।চানমারী থেকে আসা আফজাল হোসেন (৪৫) বলেন, কম টাকায় ভাল চিকিৎসা নিতে সরকারী হাসপাতালে আসি। কিন্তু লাইনে দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে ডাক্তার দেখাতে গিয়ে অনেক কষ্ট করতে হয়। ডাক্তার দেখানোর পর আমাদের নিয়ে টানাটানি করে বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার জন্যে। আমরা গরিব মানুষ আমাদের সাধ্য হয়না অধিক মূল্যের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে, কিন্তু বাধ্য হয়ে তাদের সাথে যাইতে হয়।

শিবুমার্কেট থেকে আসা কামরুন্নেসা অভিযোগ করেন, ডাক্তারদের সাথে দালালচক্রের যোগাযোগের মাধ্যমে অনেক অবৈধ কাজ চলছে। দালালরা নিয়মিত ডাক্তার কক্ষে ও বাহিরে থেকে রোগীদের বিভিন্ন প্রাইভেট ক্লিনিকে পাঠায়। ইসারার মাধ্যমে একে আরেকজনকে চিনিয়ে দিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে পাঠায়। আবার ১০০ টাকার মাধমে রোগীকে লাইন ভেঙ্গে আগে নিয়ে যায় হাসপাতালের কর্মচারীরা। একইসাথে নোংরা ও অসচ্ছ পরিবেশ আরও ভোগান্তি বাড়িয়ে দিচ্ছে।

নারায়ণগঞ্জের ১’শ শয্যা বিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল ভিক্টোরিয়া হাসপাতালের অনিয়ম ও দুর্নীতির কারণে নিয়মিত ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের মনোবল হারিয়ে যাচ্ছে, যার ফলে নিন্ম ও মধ্যবিত্ত পরিবারের রোগীরা কষ্ট হলেও ফিরছেন ব্যয়বহুল প্রাইভেট হাসপাতালগুলোতে। রোগীদের পোহাতে হচ্ছে চরম দুর্ভোগে।

স্পন্সরেড আর্টিকেলঃ